জ্যোতিশ্বরানন্দ জেএমসেন হলে আবির্ভাব উৎসবে মোহন্ত মহারাজ.....
জ্যোতিশ্বরানন্দ জেএমসেন হলে আবির্ভাব উৎসবে মোহন্ত মহারাজ... |
চট্টগ্রাম নগরীর শ্রীশ্রী কৈবল্যধামের মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ কালীপদ ভট্টাচার্য বলেছেন, শ্রীমদ্ভগবদগীতা মানুষের স্বর্গ পাওয়ার উপায় বলেছেন। সমাজ ও দেশকে আলোকিত করতে সুদীর্ঘ ৮০ বছর নিরলসভাবে গীতা প্রচার করে গেছেন অধ্যাত্ম মহাসাধক শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ। বাংলার এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তের মানুষকে তিনি গীতামুখী করার চেষ্টা করেছেন। স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ নিজেই একজন জীবন্ত গীতা। গীতার আদর্শে জীবনকে গড়ে তুলতে হবে। শিশু থেকে শুরু করে সবাইকে গীতার আদর্শে জীবনকে গড়ে তুলতে হবে, গীতাকে জানতে হবে। গতকাল ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে শঙ্কর মঠ ও মিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখা কর্তৃক নগরীর জেএমসেন হলে আয়োজিত যোগাচার্য পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের ১১৫তম শুভ আবির্ভাব উৎসবের ধর্ম মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের পূর্বে সকালে বেলুন উড়িয়ে ও বিশ্বশান্তি শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে আবির্ভাব উৎসবের উদ্বোধন করেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ ও উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরমহংস শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ।
ধর্ম মহাসম্মেলনে মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ কালীপদ ভট্টাচার্য বলেন, ধর্ম চেতনা ও ধর্মবোধ মানুষকে সত্য সনাতন সুন্দরের পথে পরিচালিত করার ফলে সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূরীভূত হয়। ধর্মবোধ মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়ে সভ্য করেছে। নিষ্কাম কর্ম ও অন্ধকারাচ্ছন্ন পথ থেকে উত্তরণের জন্য মনুষ্যত্বের সাধনা করাই হলো গীতা শিক্ষা। তাই গীতার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বজনীন ধর্মগ্রন্থ শ্রীশ্রীমদ্ভগবত গীতার কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তি মানুষকে বিভিন্ন অপকর্ম থেকে বিরত রাখে। মঠ-মন্দির শুধু ধর্ম চর্চার সাধনা করে না, মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।
শঙ্কর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট ধর্মতত্ত¡বিদ মাষ্টার অজিত কুমার শীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ধর্ম মহাসম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লায়ন সন্তোষ কুমার নন্দী এমজেএফ। প্রধান বক্তা ছিলেন হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের সিন্ডিকেট মেম্বার প্রফেসর ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য, চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি কানু কুমার দাশ, ব্যারিষ্টার পল্লব আচার্য। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন পরিষদের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক লায়ন দিলীপ কুমার শীল ও সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত কুমার শীল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শঙ্কর মঠ ও মিশনের শ্রীমৎ জগদীশ্বরানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, ইঞ্জিনিয়ার সুবল শীল, অধ্যাপক অঞ্জন দাশ, বাসুদেব দাশ, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, সুজিত বরণ ধর, কাজল কান্তি পাল, প্রদীপ মহাজন জহর, অর্পণ ধর, মিন্টু পাল লিটু, কাজল বৈদ্য, লিটন পাল, মিন্টু শীল প্রমূখ। শঙ্কর মঠ ও মিশনের সর্বস্তরের ব্রহ্মচারী, সাধু-সন্ন্যাসী, হাজার হাজার ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ^রানন্দ গিরি মহারাজের ১১৫তম শুভ আবির্ভাব উৎসব উপলক্ষে শঙ্কর মঠ ও মিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে ২ দিনব্যাপী বিভিন্ন মাঙ্গলিক কর্মসূচী নগরীর ঐতিহাসিক জেএমসেন হলে পালন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল-গুরুপূজা, মঙ্গলারতি, সহস্র কন্ঠে শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ, বিশ্বশান্তি শ্রীশ্রীগীতাযজ্ঞ, হরি ওঁ কীর্ত্তন, শ্রীশ্রী চন্ডীপাঠ, গৈরিক ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, অখন্ড প্রদীপ প্রজ্বলন, সদস্যদের সম্মাননা প্রদান, সমাজসেবা কার্যক্রম, শ্রীমদ্ভগবদগীতা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, দীক্ষাদান অনুষ্ঠান, মাতৃ সম্মেলন, যুব সম্মেলন, দুপুর-রাতে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।###
Comments
Post a Comment